জেনে নিন চুলকানির ঘরোয়া কিছু প্রতিকার, চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন, মাত্র ১ রাতে শরীরের যেকোনো চুলকানি ও চর্মরোগ দূর করে

 

আজকের পোস্টে আমরা দেখব কিভাবে চুলকানি দূর করার যায়। স্ক্যাবিস এক প্রকার চর্মজনিত রোগ যা Sarcoptes scabei নামক এক প্রকার জীবাণু দ্বারা সংঘটিত হয়।এর প্রধান লক্ষণ হল শরীরে চুলকানি ও গুটি গুটি র‍্যাশ ওঠা। স্পর্শের মাধ্যমে সাধারণত এ রোগ হয়। তাছাড়া রোগীর ব্যবহৃত কাপড় গামছা, বিছানার চাদর ও বালিশ ব্যবহার করলে এ রোগ হতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা এতে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়ে থাকে ৷প্রথমবার সংক্রমণে একজন ব্যক্তির সাধারণত দুই থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়।দ্বিতীয় সংক্রমণের লক্ষণগুলি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শুরু হতে পারে।এই উপসর্গগুলি শরীরের বেশিরভাগ অংশে, যেমন-কব্জি, আঙ্গুলের ভিতর বা কোমরের আশেপাশে উপস্থিত হতে পারে। রাতের বেলা চুলকানির তীব্রতা আরও বাড়ে।


চুলকানি এমন একটি অনুভূতি যে জায়গায় হয় সেখানে আঁচড়াতে ইচ্ছে করে। চুলকানি হতে পারে এলার্জি হলে, দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাথে সম্প্রীত সমস্যায়, কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে অথবা দেহের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অন্য কোন অন্তর্নিহিত কারণে। চুলকানি বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। খুব সহজের এদের চেনা যেতে পারে এদের চেহারা দেখলে বা এদের হওয়ার কারণ জানলে। খুব সাধারণ কারণগুলি গুলি হল ফুসকুড়ি, আমবাত, ছত্রাক সংক্রমণে এবং কোন পোকার কামড়। যাদের দেহের ত্বক শুষ্ক, তাদের চুলকানি বেশি হয়। এর কিছু চাক্ষুষ লক্ষণ আছে, যেমন জায়গাটি লাল হয়ে যাওয়া, প্রদাহ, ফুলে যাওয়া এবং ফোসকা পড়া। চুলকানি সাধারণত কোন গুরুতর উপসর্গ নয় কিন্তু যদি দীর্ঘ দিন ধরে হতে থাকে তাহলে কয়েকটি গুরুতর অসুখের উপসর্গ হিসাবে চুলকানিকে দেখা যেতে পারে, যেমন, কিডনি বা লিভারের ত্রুটি। চুলকানির কারণ জানার পর চুলকানির অনেকগুলি প্রভাবশালী চিকিৎসার কার্যক্রম রয়েছে যা শুরু করা যেতে পারে। এই গুলির মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ভাবে লাগানোর জন্য মলম এবং খাবার ওষুধ। ঘরোয়া চিকিৎসার পদ্ধতিও সাময়িক ভাবে স্বস্তি দিতে পারে।



চুলকানি এর চিকিৎসা – Treatment of Itching in Bengali

চুলকানির কারণ নির্ণয়ের পরে তার চিকিৎসা ব্যবস্থা নিম্ন লিখিত প্রকারের হতে পারে:


কর্টিকোস্টেরয়েড ক্রিম

ওষুধ-যুক্ত এই ক্রিমগুলির ত্বকের উপরে আরামদায়ক এবং নিরাময় প্রভাব আছে। এই ক্রিমগুলি ত্বক শুষ্ক হতে দেয় না, তাই চুলকানি কমতে সাহায্য করে। সাধারণত এই গুলির মধ্যে 1% হাইড্রোকরটিজোন থাকে। ডাক্তারবাবুর পরামর্শ ও প্রেসক্রিপশান ছাড়া এই স্টেরয়েড-যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করে অনুচিত।


ক্যালসিনেউরিন ইনহিবিটারস

এই ওষুধ নির্দিষ্ট এলাকায় চুলকানির চিকিৎসা করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।


এন্টিডিপ্রেসান্টস

এন্টিডিপ্রেসান্টসগুলি শরীরের হরমোনগুলির উপর প্রভাব ফেলে এবং তাই চুলকানির থেকে পরিত্রাণ পেতে সহায়তা করে।


চুলকানি দূর করার মলম


জেলস

একটি সহজ অ্যালো ভেরা জেল একটি ময়শ্চারাইজার হিসাবে যন্ত্রণা দায়ক ত্বক শান্ত করতে এবং শুষ্ক ত্বক নিরাময় করতে সুপারিশ করা যেতে পারে।


এন্টিহিস্টামিনস

এন্টিহিস্টামিনযুক্ত ওষুধগুলি (সাধারণত খাবার ওষুধ) এলার্জি কমাতে খুবই সাহায্য করে। এইগুলি প্রদাহ বন্ধ করে এবং তাই চুলকানিও বন্ধ হয়।


আরো পড়ুন  ডাবের পানি ১১ রোগের ওষুধ জেনে নিন উপকারিতা সহ

আলো চিকিৎসা

আলো চিকিৎসাতে একটি বিশেষ নির্ধারিত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ইউ-ভি আলোক রশ্মি ব্যবহার করে চুলকানিকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই ব্যবস্থাকে ফোটোথেরাপিও বলা হয়। একাধিক বার এই চিকিৎসা নিতে হয় যাতে দীর্ঘস্থায়ী ফল পাওয়া যায়।


রানের চিপায় চুলকানি দূর করার উপায়


স্বাস্থ্যের অন্তর্নিহিত অবস্থার চিকিৎসা

কিডনি এবং যকৃৎ বা রক্তের চিনির মাত্রা সংক্রান্ত স্বাস্থ্যের অবস্থার চিকিৎসা করলে চুলকানিও নিয়ন্ত্রণের মধ্য এসে যায়। রোগের চিকিৎসা হলে তার উপসর্গগুলিও বিদায় নেয়।

জীবনধারার পরিবর্তন


জীবনধারার কিছু পরিবর্তন করে চুলকানি নিয়ন্ত্রণ করে যায়:


চুলকানি কারণ হয় এমন সব পদার্থ এড়িয়ে চলুন।

চুলকানির জায়গায় ওষুধ-যুক্ত মলম লাগান। এগুলি ওষুধের দোকানে সহজেই পাওয়া যায়। এই মলমগুলি শুষ্ক এবং যন্ত্রণাদায়ক ত্বককে আরাম দেয়।

প্রভাবিত জায়গা চুলকাবেন না। এটি যদি ছত্রাকের সংক্রমণ হয়, তাহলে চুলকালে ত্বকের ক্ষতি হবে এবং সংক্রমণ অন্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়বে। চুলকালে নখের নিচের জীবাণু চুলকানির জায়গায় গিয়ে প্রদাহ আরও বৃদ্ধি করবে।

মানসিক চাপ কমান। চাপ বৃদ্ধি হলে আমাদের দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়ে যায় এবং ফলে চুলকানি এবং অন্যান্য এলার্জির সৃষ্টি করে।


জেনে নিন চুলকানির ঘরোয়া কিছু প্রতিকার

বেকিং সোডা

বেকিং সোডা চুলকানি প্রতিরোধে অত্যন্ত উপকারী। গোসলের সময়ে হালকা গরম পানিতে বেকিং সোডা দিয়ে গোসল করলে শরীরের চুলকানি অনেকটাই কমে যায়। এক্ষেত্রে একটি চৌবাচ্চাতে ১ কাপ বেকিং সোডা মেশাতে হবে এবং বড় এক বালতি পানিতে ১/২ কাপ বেকিং সোডা মেশাতে হবে। বেকিং সোডা মেশানো পানিতে কমপক্ষে ৩০ মিনিট শরীর ভিজিয়ে রাখার পর শরীর পানি দিয়ে না ধুয়ে শুকিয়ে ফেলতে হবে।



লেবুর রসে আছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা ত্বকের চুলকানি কমিয়ে দিতে সহায়তা করে। চুলকানির প্রতিকার পাওয়ার জন্য লেবুর রস ব্যবহার করাও খুব সহজ। ত্বকের যে স্থানে চুলকানি অনুভূত হচ্ছে সেখানে লেবুর রস লাগিয়ে শুকিয়ে ফেলুন। চুলকানি কমে যাবে কিছুক্ষণের মধ্যেই।


গর্ভাবস্থায় যোনিতে চুলকানি


তুলসী পাতা

তুলসী পাতায় আছে ইউজেনল যা একটি অ্যান্সথেটিক উপাদান। এই উপাদানটি চুলকানি কমিয়ে দিতে সহায়ক। এক মগ ফুটন্ত পানিতে ১৫/২০টি তুলসী পাতা জ্বাল দিয়ে নির্যাস বের করে নিন। এরপর একটি পরিষ্কার টাওয়েলে পানিটি লাগিয়ে হালকা গরম থাকা অবস্থাতেই চুলকানির স্থানে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বেশ আরাম অনুভূত হবে।


পুদিনা পাতা

পুদিনা পাতারও আছে অ্যান্সথেটিক ও ইনফ্লেমেটরি উপাদান। চুলকানির প্রতিসেধক হিসেবে তাই পুদিনা পাতাও অত্যন্ত উপকারী। এক মগ ফুটন্ত পানিতে এক আউন্স পুদিনা পাতা জ্বাল দিয়ে নির্যাস তৈরি করে নিন। এরপর এই পানিটি চুলকানির স্থানে লাগিয়ে রাখুন। 


চুলকানি কমে যাবে কিছুক্ষণের মধ্যেই।

অ্যালোভেরা

ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরার ব্যবহারের কথা তো সবাই জানেন। চুলকানি প্রতিকারেও অ্যালোভেরার জুড়ি নেই। ত্বকের যে স্থানে চুলকানি হচ্ছে সেখানে একটি তাজা অ্যালোভেরা পাতা থেকে রস বের করে লাগিয়ে রাখুন। চুলকানি কমে যাবে কিছুক্ষণের মধ্যেই।

Tags

إرسال تعليق

0 تعليقات
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies