ঘন প্রস্রাবের চাপ? যে ৫ কারণে ঘটে ,ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ হলে যা খাবেন,ঘন ঘন প্রসাব হলে করনীয় কী,শিশুদের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ

 


মানুষের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া খুবই অস্বস্তিকর ব্যাপার। সাধারণত ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার মানে হলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় বেগ পাওয়া এবং প্রস্রাব করা। এটি যেকোন ব্যক্তির প্রতিদিনকার দিনলিপিতে বিঘ্ন ঘটায় এবং ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে থাকে। তাই দ্রুত আরাম পাওয়ার জন্য ঘন ঘন প্রস্রাব হলে শুরুতে অনেকেই না বুঝে এন্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করেন যা বহু ক্ষেত্রেই উল্টো ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


অনেকের দিনে ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আসে আবার অনেকের রাতে বেশি আসে আবার কারো ক্ষেত্রে দিন রাতে সমান থাকে। দিনে ৪-৫ বার প্রস্রাবের চাপ আসা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। তবে তার থেকে বেশি বার হলে কিন্তু চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।


আবার ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া মানেই ডায়াবেটিস, বিষয়টি কিন্তু তাও নয়। এর পেছনে যেমন ডায়াবেটিস থাকতে পারে তেমনি আরো বহু কারণ থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্লাডার যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাজ করা শুরু করে তাহলেই ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আসে। আর এরকমটা নানা কারণে হতে পারে যেমন-অ্যালকোহল সেবন, ক্যাফিন, ডায়াবেটিস, ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন, পেলভিক রিজিয়ানে কোন অসুবিধা, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রয়া থেকেও হতে পারে।


এই অসুখে দেখা যায়, ব্লাডার বা মূত্রথলির পেশি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে যায়, প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করতে থাকে। ফলে একজনের বারবার প্রস্রাব পেতে থাকে। অনেকের আবার মূত্রথলি থেকে ছিদ্র হয়ে মুত্র চুঁইয়ে পড়তে পারে।


মূত্রথলির এই সমস্যার পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। কেন এমন হচ্ছে সেটা চিহ্নিত করা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। অনেক রকম সমস্যা এর জন্য দায়ী হতে পারে।


ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন– মূত্রথলিতে বা কিডনিতে ইনফেকশন হলে তা থেকে এমন সমস্যা হতে পারে।


আউটফ্লো অবস্ট্রাকশন- বিশেষত পুরুষদের ক্ষেত্রে এমন হয়। প্রস্টেটের সমস্যা থেকে ব্লাডারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।


নিউরো বা স্নায়ুজনিত সমস্যা- যাদের পারকিনসনস ডিজিজ, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের সমস্যা রয়েছে অথবা যাদের একবার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডারের সমস্যা দেখা দেয়।


দায়ী কিছু ওষুধ – উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ (ল্যাসিক্স, ডাইয়ুরেটিক্স) টানা খেলে তা থেকে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।


মদ্যপান কিংবা কফি বেশি পান করলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।


মহিলা কিংবা পুরুষ সকলের ক্ষেত্রেই এমন হতে পারে। বিশেষ করে, যে সকল মহিলার মেনোপজ হয়ে গিয়েছে তাদের রিস্ক অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। আর পুরুষদের, যাঁদের প্রস্টেটের অসুখ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে মূত্রথলির এমন সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। লক্ষণ থাকলে ইউরিন কালচার, ব্লাডার ক্ল্যান, সিস্টোস্কোপি, ইউরো ডায়নামিক টেস্টিং করে ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডার রোগ নির্ণয় করা হয়।


মূত্রথলির এমন সমস্যা হলে শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে যান। যতটা সম্ভব কফি কিংবা ক্যাফিন জাতীয় পানীয় বর্জন করুন। কার্বোনেটেড ড্রিংক, মিষ্টি জাতীয় পানীয়, মশলাদার খাবার, অ্যাসিডিক ফুড ডায়েট থেকে বাদ দিন। ওজন বেশি থাকলে তা কমাতে হবে। পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করুন। এতে পেলভিক বা মূত্রনালির পেশির জোর বৃদ্ধি পায়। সারাদিনে সময় ধরে বাথরুমে যাওয়ার অভ্যাস করুন।


যাদের বারবার প্রস্রাব হয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে, তারা একটা ডায়েরি মেনটেইন করুন। তাহলে চিকিৎসা করতে, সমস্যা চিহ্নিত করতে অনেক সুবিধা হবে। এসব নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবেই।

Tags

إرسال تعليق

0 تعليقات
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies