বিয়ের পর নব দম্পতির প্রথম আমল ও দোয়া,বাসর রাতে স্ত্রীর কাছে কী চায় স্বামী?,বাসর রাতে ছেলেদের প্রথম কি করা উচিত?, বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান

 

বিয়ের পর নব দম্পতির প্রথম আমল ও দোয়া,বাসর রাতে স্ত্রীর কাছে কী চায় স্বামী?,বাসর রাতে ছেলেদের প্রথম কি করা উচিত?, বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান

বিষয়:বাসর রাতে ছেলেদের প্রথম কি করা উচিত?, বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান,ইসলামের আলোকে বাসর রাতে স্ত্রীর সাথে করণীয় কি?

বিয়ের মধ্যেই নারী-পুরুষের মধ্যে একটি সম্পর্ক স্থাপন করে। আর সেটাই ইসলামে একমাত্র বৈধ উপায়। বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা এবং তা যথারীতি আদায় করার জন্য ইসলামে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীকে মোহরানা প্রদান করা ফরজ।

বাসর রাত বা ফুলসজ্জার রাত শব্দটা শুনলেই আমাদের সকলের মনে একটু উত্‍সাহ কাজ করে থাকে। তবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ফুলসজ্জার ব্যপার নিয়ে উত্‍সাহ একটু বেশি থাকে। তাই এই বিষয়ে পুরুষদের কিছু দিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। কারণ শুধু মাত্র উত্‍সাহ থাকলে চলবে না। 

বিয়ের পর বাসর রাতে কী করবেন কী করবেন না? এ বিষয়ে ইসলাম কী বলে? বাসর রাত সবার জীবনে একটা গুরুত্বপূর্ণ রাত। জীবনে এমন রাত একবারই আসে। চলুন ইসলামের দৃষ্টিতে বাসর রাত সম্পর্কে জেনে নিই।

বিয়ের পর বাসর রাতে স্বামী স্ত্রীর কি করে বা কি করা উচিত এবং কি করা উচিত নয়? এ বিষয়ে ইসলাম কি বলে, চলুন জেনে নেওয়া যাক?

  1. গোলাপ ফুল দিয়ে দুজন দুজনাকে বরণ করে নিতে হবে।
  2. উভয়ই মহান আল্লাহকে যে ভালবাসবেন তা পরিষ্কার ভাবে দুজনা বোঝা পড়া করবেন।
  3. হানিমুনে কোথায় যাবেন তা বাসর রাতেই ঠিক করবেন, সে ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীকে এটা ঠিক করতে হবে যে, সবচেয়ে পৃথিবীর মূল্যবান যায়গা মক্কা মদীনায় যাওয়া এবং ওমরা করার পরিকল্পনা করা।
  4. ছোট খাট ভুলের জন্য কাউকে তিরষ্কার না করা। কাউকে ছোট না করা।
  5. কোন পক্ষের আত্নীয় স্বজনকে ছোট না করা, গালি না দেওয়া, অপমান না করা।
  6. জীবনের প্রথম ভালবাসার রাত, তাই ভালবাসা অক্ষুন্ন রাখা।
  7. দুজনাতে একটু খোশ গল্প করা, জীবন থেকে কোন গল্প বলা।
  8. ভবিষ্যত জেনারেশনের ব্যাপারে আলাপ সেরে নেওয়া। তবে বেশি দূর অগ্রসর না হওয়াই ভাল।
  9. মোহরানা যদি বাকি থাকে সেটা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া, অল্প দিনের মধ্যেই মোহরানা পরিশোধ করা। স্ত্রী যদি চাকরি করে তবে টাইম টেবিলটা নিয়ে একটু পরিষ্কার করা। চাকরি না করলে ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা বলা।
  10. এ রাতই হল উত্তম ভালবাসার রাত। দুজনার সব আকুতি মেশানো ভালবাসা দিয়ে দুজনাকে জয় করা। কোনভাবেই যেন ফজরের নামাজ কাজা না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা।

মানব জীবনের প্রতিটি পর্বে ইসলামের শিক্ষা রয়েছে। দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত সৃষ্ট সমস্যার সমাধান দিয়েছে কোরআন-হাদিস। নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতের আলোচনার সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর গোপন বিষয়েও কথা বলেছেন নবী মুহাম্মদ সা.।

ইসলামিক নিয়মে সহবাস করা:

‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতানা ওয়া জান্নিবিশ শাইতানা মা রাযাকতানা।’

অর্থ: আমি আল্লাহর নাম নিয়ে এই কাজ শুরু করছি। হে আল্লাহ! শয়তানকে আমাদের থেকে দূরে রাখ এবং যে সন্তান তুমি আমাদের দান করবে তার থেকেও শয়তানকে দূরে রাখ।

নিচে প্রশ্নোত্তর আকারে বাসর রাত সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো।

ইসলামের দৃষ্টিতে সহবাস সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন : বাসর রাতে নববধূ কিভাবে সজ্জিত হবে?

উত্তর : নববধূ মেহেদি ব্যবহার করবে, অলংকার পরবে এবং সাধ্যমত শরিয়ত সম্মত উপায়ে সেজেগুজে উত্তম পোশাক-পরিচ্ছেদে সজ্জিত হবে।

প্রশ্ন : বাসর ঘরে কোনো নামাজ পড়বে কি না?

উত্তর : হ্যাঁ, বাসর ঘরে স্বামী-স্ত্রী দুই রাকাত (শুকরানা) নামাজ পড়বে।

প্রশ্ন : নামাজ পড়ার পর কী করবে?

উত্তর : নামাজ শেষে স্ত্রীর কপালের দিকে সামনের চুল ধরে দোয়া পড়া সুন্নত। দোয়াটি হলো:
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা যুবিলাত আলাইহি, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা যুবিলাত আলাইহি’

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে তার (স্ত্রী) কল্যাণের প্রার্থনা করছি এবং প্রার্থনা জানাই তার সেই কল্যাণময় স্বভাবের যার ওপর আপনি তাকে সৃষ্টি করেছেন। আর আমি আপনার আশ্রয় চাচ্ছি তার অনিষ্ট থেকে এবং তার সেই অকল্যাণময় স্বভাবের অনিষ্ট থেকে যার ওপর আপনি তাকে সৃষ্টি কছেন।

প্রশ্ন : নামাজ ও দোয়া পড়ার পর অন্য কোনো আমল আছে কি?

উত্তর : বিভিন্ন ইসলামি গ্রন্থে বাসর ঘরে উপরোক্ত আমলগুলো করতে বলা হয়েছে। এরপর স্বামী-স্ত্রী নিজেদের মতো পরস্পর পরিচিত হবে। তবে প্রথমে স্বামী মহর বিষয়ক আলোচনা করে নিবে। তখন পূর্ণ মহর আদায় না করতে পারলে স্ত্রী থেকে সময় চেয়ে নিবে।

প্রশ্ন : অনেকে বলে, বাসর রাতে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা অনুচিত, কথাটি ঠিক কি?

উত্তর : না, এধরনের কথা ঠিক নয়। এ সময় যে কোনো উপভোগের জন্য স্বামী-স্ত্রী পূর্ণ স্বাধীন। তারা সন্তুষ্টচিত্তে যা ইচ্ছা করতে পারে। তবে প্রথমরাত হিসেবে একে অপরের চাহিদার প্রতি লক্ষ রাখা উচিত। অবশ্য বাসর রাতে স্ত্রী মাসিক স্রাবেআক্রান্ত থাকলে সুস্থ না পওয়া পর্যন্ত সহবাস করা যাবে না।

প্রশ্ন : সহবাসের শুরুতে কোন দোয়া পড়তে হয়?

উত্তর : বিসমিল্লাহ বলে সহবাস শুরু করা। তারপর শয়তান থেকে পানাহ চাওয়া।

বিয়ের প্রথম রাত, অর্থাৎ ফুলশয্যার রাত হচ্ছে যে কোনো দম্পতির জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ রাত। বলাই বাহুল্য যে এই রাত নিয়ে উভয়েরই অনেক স্বপ্ন, অনেক চাওয়া-পাওয়া থাকে।

নারী না হয় একবুক আশা নিয়ে স্বামীর জীবন সঙ্গী হয়ে শ্বশুর বাড়িতে যান। কিন্তু স্বামী কী আশা করেন স্ত্রীর কাছে?ফুলশয্যার রাতে প্রত্যেক স্বামীই নিজের স্ত্রী কাছ থেকে ৭টি বিষয় আশা করেন। পাঠকদের কাছে তা তুলে ধরা হলো:

১. স্ত্রীকে দেখা যাবে অপ্সরার মতন : জীবনে খুব কম মানুষই বারবার বিয়ে করেন। তাই বিশেষ এই রাতটি  জীবনে বারবার ফিরে আসে না। তাই প্রত্যেক পুরুষই স্ত্রীকে সেদিন নিজের স্বপ্নকন্যা রূপে দেখতে চান। আশা করে থাকেন যে স্ত্রীকে দেখাবে পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর রমনীর মত।

২. স্ত্রীর জীবনে তিনিই প্রথম পুরুষ : অধিকাংশ পুরুষ আজও আশা করেন যে স্ত্রী ভার্জিন হবে। অর্থাৎ তিনিই হবেন প্রথম পুরুষ যার সাথে স্ত্রী প্রথম শারীরিক সম্পর্ক করেছে।

৩. একটু লজ্জা: লজ্জা নারীর ভূষণ। এই কথাটি ফুলশয্যার রাতেই যেন সবচাইতে বড় সত্য। বিয়ে প্রেমের হোক বা পারিবারিক, প্রত্যেক পুরুষই এই বিশেষ রাতে আশা করে থাকেন যে স্ত্রী একটু লজ্জা পাবেন। একটু প্রেমের ছলকলা খেলবেন, আর তবেই ধরা দেবেন প্রেমের বন্ধনে।

৪. সমৃদ্ধ জীবনের আশ্বাস: দুজনে একত্রে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন, বিয়ের এই প্রথম রাতটি তাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। পরস্পরকে আশ্বাস ও প্রতিজ্ঞা করার জন্য আদর্শ সময়। স্বামীও আশা করেন যে স্ত্রী তাকে একটু সুখের সংসারের আশ্বাস দেবেন।

৫. নিজের প্রশংসা : নিজের প্রশংসা শুনতে কে না ভালোবাসে? আর পুরুষেরা তো স্ত্রীর মুখে নিজের প্রশংসা শুনতে সবচাইতে বেশি পছন্দ করেন। বিয়ের প্রথম রাতেই এই প্রত্যাশা থাকে সবচাইতে বেশি।

৬. শ্বশুর বাড়ির প্রাপ্তি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ : বিয়েতে কী হলো, কী হলো না, কী পেলেন, কী পেলেন না ইত্যাদি নিয়ে হতাশা বা ক্ষোভ ব্যক্ত না করে যা পেয়েছেন সেটা নিয়েই সন্তুষ্টি প্রকাশ করুন। দেখবেন স্বামীর চোখে আপনার সম্মান হয়ে উঠেছে আকাশচুম্বী।

৭. নিজের ভার স্বামীর হাতে ছেড়ে দেয়া : এটা সেই বিশেষ রাত, যে রাতে স্ত্রী নিজেকে অর্পণ করেন স্বামীর জীবনে। নিজের দায়িত্ব ছেড়ে দেন স্বামীর হাতে। আর আপনি যতই স্বাধীনচেতা নারী হয়ে থাকুন না কেন, আপনার স্বামী কিন্তু সারা জীবনই চাইবেন যে আপনি তাকে বিশ্বাস ও ভরসা করুন। আর এই কাজটি বিয়ের রাতে করলে খুশি হয়ে ওঠেন সকল পুরুষই।

إرسال تعليق

0 تعليقات
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Hollywood Movies